২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ । শিকাগো, ইলিনয়
আউ-যুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বা-নির্ রজি-ম। বিমিল্লা-হির্ রহমা-নির্ রহি-ম। আলহামদুলিল্লা-হি রব্বিল আ-লামি-ন। ওয়াস্ সলা-তু ওয়াস্ সালামু আলা- সায়্যিদিনা- মুহাম্মাদিন্ ওয়া আলা- আ-লিহি ওয়া সহবিহি আজমাই-ন্। দাস্তুর ইয়া সায়্যিদি, ইয়া সুলতান আল-আম্বিয়া। দাস্তুর ইয়া সায়্যিদি, ইয়া সুলতান আল-আউলিয়া। দাস্তুর ইয়া সায়্যিদি, মাওলানা শেখ নাজিম ق । দাস্তুর ইয়া সায়্যিদি, ইয়া কুতব্ আল-মুতাসাররিফ। ইয়া রিজাল আল্লাহ। [তাওয়াসসুল]
বিমিল্লা-হির্ রহমা-নির্ রহি-ম। আমরা সবাই মাওলানা শেখ নাজিমের ق সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই । কীভাবে এটা করতে হয় তা শেখানোর জন্য এখন আমরা আমাদের মুর্শিদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারি এবং আমরা তাঁর সাথে যোগাযোগ করতে পারি। আমরা আধ্যাত্মিকভাবে কীভাবে তাঁর সাথে থাকতে পারি সেই গোপন বিষয়টি মাওলানা শেখ নাজিম ق আমাদের জানিয়েছেন। সুতরাং, তিনি অন্য জগতে চলে যাওয়ার পরে এখন মাওলানা শেখ নাজিমের ق সঙ্গে আপনি কীভাবে আধ্যাত্মিকভাবে সংযুক্ত থাকবেন? তিনি প্রথমে বলেছিলেন, মুমিনদের উচিত তারা যে সর্বোত্তম দাতব্য কাজ করতে পারে তা জেনে রাখা এবং সেই চ্যারিটির মাধ্যমেই মাওলানা শেখ নাজিম ق এর সঙ্গে সংযোগ তৈরি সম্ভব। এবং মাওলানা শেখ নাজিম ق এবং যাদের নাম আমরা উল্লেখ করছি সকল আউলিয়াদের যারা ভালোবাসেন তাদের জন্য এটি করা খুবই সহজ।
সকল ওয়ালি, মুরশিদ, সকল ১২৪,০০০ আউলিয়া, যদি আমরা তাদের সঙ্গে আধ্যাত্মিক সংযোগ স্থাপন করতে এবং তাদের সঙ্গে প্রার্থনা করতে চাই, তাদের আধ্যাত্মিক উপস্থিতিতে থাকতে চাই, আমরা এখনই সেটা করতে পারি। আমরা আজ রাতে ও আগামীকালই এটি করতে পারি এবং আমরা তা প্রতি রাতে ও দিনেই করতে পারি; মাওলানা শেখ নাজিম ق আমাদের এমনটিই শিখিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে নবি ﷺ এবং ইমানদাররা যারা পরবর্তী দুনিয়াতে গেছেন, বিশেষত যারা ই জীবনে রহস্য ও নূর এ ছড়িয়ে গেছেন তারা যখন পরবর্তী জীবনে প্রবেশ করেন তখন আল্লাহ তাদেরকে এই আয়াতে সজ্জিত করেন:
بَلْ أَحْيَاء عِندَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ
বরং তারা নিজেদের পালনকর্তার নিকট জীবিত ও জীবিকাপ্রাপ্ত। (আল ইমরান, ২:১৬৯)
এটিই “জীবিত থাকার” রহস্য। মাওলানা শেখ ق বলেছেন যে তারা যখন জীবিত ছিলেন, আমাদের মতোই, আমাদের অবশ্যই আমাদের নামাজ, রোজা ও অন্যান্য উপাসনা করতে হয় এবং লোকেরা যখন পরবর্তী জীবনে প্রবেশ করে, তখন তাদের একটি নির্দেশ পালনই বাকি থাকে, বাকি সমস্ত কিছু বন্ধ হয়ে যায়। যে সমস্ত সন্ত, নবি এবং শেখগণ পরবর্তী জীবনে গেছেন তাদের প্রত্যেকেরই এই দুনিয়ার একটি কাজ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং একটি জিনিসই তাদের হারিয়ে যায় নি, তা হলো সালাত আল-ফজর, ফজরের নামাজ। সমস্ত নবিগণ ও আউলিয়াগণকে পরবর্তী দুনিয়াতে যাওয়ার সময় আদেশ করা হয়, কারণ তারা তাদের পালনকর্তার উপস্থিতিতে থাকেন এবং জীবিকা লাভ করেন, তাদেরকে হযরত মুহাম্মাদ ﷺ -এর সঙ্গে ফজরের নামায পড়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে, তারা বায়তুল-মা’মুরে সলাত আদায় করেন। আকাশের কাবা, যা বন্যার (নূহ আ. এর) সময় উঠিয়ে নেওয়া হয়েছিল এবং আকাশে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই ফেরেশতারা এবং আধ্যাত্মিক জীবিতরা তাদের পালনকর্তা আল্লাহ তা’আলার নিকট প্রার্থনা করে। সুতরাং মাওলানা শেখ ق বলেছেন যে তাদের সমস্ত বাধ্যবাধকতা শেষ হয়ে গেছে যখন তারা পরজীবনে চলে গেলন, কেবল তাদের আকাশের কাবা বায়তুল-মা’মুরে নবি ﷺ এর পিছনে ফজরের নামাজ পড়তে হয়। এছাড়াও যারা সে জগতে আছেন, নবি আলাইহিস সালাম ও আউলিয়াউল্লাহগণ এবং যারা এখনও এই দুনিয়াতে বাস করেন তাদের বায়তুল মা’মুরে একটি আধ্যাত্মিক ভ্রমণ করতে হয় এবং নবিগণ এবং আউলিয়াগণের সঙ্গে একত্রে হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর পিছনে সলাত আদায় করতে হয়। আবার তাদেরকে আমাদের সাথে এই পৃথিবীতে তাদের শারীরিক উপস্থিতি বজায় রাখার জন্য নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
মাওলানা শায়খ নাজিম ق আরও বলেছেন, আমরা যদি জামাতে ফজরের নামাজ আদায় করি, আল্লাহ তায়ালা এমন এক ফেরেশতা তৈরি করবেন যিনি আমাদের জন্য আকাশে রসুলুল্লাহ ﷺ-এর পিছনে, আউলিয়াদের পেছনে, আপনার শেখের পিছনে, আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামদের পিছনে নামজ পড়েন, অর্থাৎ এভাবে আমরা প্রতিদিন সকালে তাদের সাথেই নামাজ পড়ি। যে কেউ মাওলানা শেখ নাজিমের ق সঙ্গে আধ্যাত্মিকভাবে সংযুক্ত থাকতে চায় তাকে অবশ্যই সকালে উঠে নামাজের জন্য মসজিদে যেতে হবে। এবং সিদি আবদুল কাদির আল জিলানী ق , সিদি আবদুল খালিক আল-গুজদাওয়ানী ق, সিদি আদ-দাসুকি ق, সিদি আহমদ আল-বাদাওয়ি ق, সিদি আলী আল-হুজবেরির ق সঙ্গে যুক্ত হতে চাইলে এমনকি ঘরে বসে জামাতে ফজরের নামাজ পড়ুন। মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় করা কঠিন [আমেরিকা বা মুসলিমবিরল দেশে] কারণ আপনাকে এজন্য বিছানা থেকে উঠে নিজে গাড়ি চালিয়ে ফজরের জন্য মসজিদে যেতে হবে, এবং একারণেই আমরা মুর্শিদের সাথে আমাদের যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেছি।
আমি যখন সাইপ্রাসে মাওলানা শেখ নাজিম ق -এর কাছে গিয়েছিলাম তখন আমি নিজে এটি দেখেছিলাম; তিনি যখন দু’জনকে বলছিলেন তখন আমি ঘরে উপস্থিত ছিলাম। তিনি নিশ্চিত করেছিলেন যে, প্রতি সকালে তারা তাঁকে দেখতে আসেন এবং তাঁকে স্মরণ করেন। তাই সর্বদা মসজিদে ফজরের নামাজ জামাত করার চেষ্টা করতে হবে। তিনি বলেছিলেন, “এই ব্যক্তি আমার সাথে যোগাযোগ করেন এবং প্রতিদিন সকালে আমার সঙ্গে সালাত আদায় করেন,” যদিও ওই ব্যক্তি সাইপ্রাসেেই বাস করেন না। তাহলে, আমাদের যা করা উচিত তা হলো: উঠে পড়ুন, ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে যান, মাওলানার নাম স্মরণ করুন এবং আপনি হবেন তিনি ও অন্যান্য শেখদের সঙ্গে সংযুক্ত। বায়তুল-মা’মুরে প্রতিটি ভোরে রসুলুল্লাহ ﷺ এর পিছনে সালাত আদায় করা আমাদের বাধ্যবাধকতা। আমরা সাধারণ মুসলমান এবং আমরা যদি তা করি তবে আল্লাহ তায়ালা নবি করিম ﷺ এবং আমাদের মুর্শিদের পিছনে সালাত আদায় করার জন্য আমাদের অনুরূপ এক ফেরেশতা তৈরি করবেন; এবং তার পুরষ্কারটি আমাদের পক্ষ থেকে সদাকা হিসাবে লেখা হবে।
মসজিদে যখন আমরা নামাজের জন্য কাতারে দাঁড়াই তখন আপনি আপনার পাশে থাকা লোকদের দেখতে পান এবং আপনি ইচ্ছা করলে তাদের সাথে হাত মেলাতে পারেন বা তাদেরকে ‘হ্যালো’ বলতে পারেন। একইভাবে, আমরা যখন রসুল ﷺ এর পিছনে কোনও সারিতে থাকি, তখন আমরা সেখানকার প্রতিটি রুহ, নবি, ওয়ালি এবং ফেরেশতাদের সঙ্গেও যুক্ত হই। সুতরাং কৌশল হলো ভোর হওয়ার আগে ঘুম থেকে উঠতে হবে ও মসজিদে যেতে হবে। আপনি যদি এটা করতে পারেন তাহলে এর অর্থ হলো, আপনি তাদের সাথে সংযুক্ত হয়েছেন, আধ্যাত্মিকভাবে আপনি সেখানে আছেন, এমনকি আপনি তা অনুভব না করলেও।
আমাদের অহং (নফস) মসজিদে বিশেষত ইশা ও ফজরের নামাজ পড়তে চায় না এবং নবি করিম ﷺ হাদিসে বলেছেন যে, এই দুটি নামাজ মুনাফিকদের পক্ষে সবচেয়ে বেশি কঠিন। তবে তারা যোহর, আসর ও মাগরিবের জন্য আসে, কারণ আপনার প্রতিদিনের রুটিনের সঙ্গে তার মিল আছে, তাই তা কোনও সমস্যা নয়।
দ্বিতীয় জিনিসটি মাওলানা শেখ নাজিম ق বলেছেন, যিনি মসজিদে এশার নামাজ পড়ছেন তিনি আবু বকর আস-সিদ্দিক (রা.) এর পিছনে নামাজ পড়ছেন এবং তাঁর পেছনে নকশবন্দি আউলিয়াগণ আছেন এবং আল্লাহ তাঁর নূর থেকে ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেছেন যা মহান রবের সামনে আমাদের প্রতিনিধিত্ব করবে। মাওলানা শেখ নাজিম ق বলেছেন এটি জিহাদ আল-আকবর, সুতরাং আমরা যদি কেবল এটি করি, জামাতের সঙ্গে ফজরের ও এশার সলাত আদায় করি, তাহলে আপনি দুটি খুঁটির মাঝখানে নিজের নফসকে রাখলেন, নবি করিম ﷺ ও সায়্যিদিনা আবু বকর আস-সিদ্দিক (রা.) এর মাঝখানে। যদি আপনি চুম্বকের দুটি খুঁটির মধ্যে একটি ধাতব টুকরা রাখেন তবে তা সেটার আকর্ষণ এড়াতে পারে না: আপনার ইগো শেকলে আটকা পড়ে, এর গতি ও পরিধি সীমিত হয়ে যায়, কারণ এখন এটি দুটি মেরুর মধ্যে রয়েছে!
মাওলানা শেখ ق বলেছেন যে যারা এই কাজটি চালিয়ে যাচ্ছে তারা জিহাদ আল-আকবরে পৌঁছে যাবে, তার অহং (নাফস) এর আধিপত্যের সুরক্ষা হবে। এটি নফস, দুনিয়া, আকাঙ্ক্ষা এবং শয়তানের শেকল থেকে নিরাপদ ও মুক্ত থাকার রহস্য: দৈনিক এই দুইবার জিহাদ আল-আকবর করুন, কারণ আমাদের নামাজ আবু বকর আস্ সিদ্দিক (রা.) কে অনুসরণ করে; সমস্ত পবিত্র মানুষেরা রসুল (ﷺ) এর পিছনে ফজরের নামাজ আদায় করেন, তাদের মধ্যে যারা এখনও জীবিত রয়েছেন তারা দুটি জগতের মধ্যে রয়েছেন, শারীরিকভাবে আমাদের সাথে কিন্তু বাস্তবে তাদের সাথে আছেন। আমরা যদি এভাবে নামাজ পড়ি, মসজিদে একজন ইমামকে অনুসরণ করি এবং মাওলানা শেখ নাজিম ق যেমন শিখিয়েছেন, আমরা যখন নামাজের মাধ্যমে ঐশী উপস্থিতিতে প্রবেশ করি, তখন বলি, “হে আমার রব! আমি হক্বের ঘরে প্রবেশ করেছি, হকের উপস্থিতিতে এবং আমি নিজেকে ইমামের পেছনে এনেছি যিনি হাদরাতিল্লাহে উপস্থিত,” তখন আমাদের ইবাদত হাদরাতিল্লাহে সর্বশক্তিমানের সাথে সরাসরি যুক্ত হবে।
আমরা যখন মসজিদে ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করি তখন তা সংযুক্ত কি না আপনি জানেন না, তাই মাওলানা বলেছিলেন যে, এটি আমাদের পক্ষে সর্বোত্তম কাজ, অর্থাৎ মসজিদে ফজরের সালাত আদায় করা। এতে আমাদের জন্য দিনেরবেলায় সমস্ত কিছু সহজ হবে, কারণ আমরা ফজরের সালাত দিয়ে দিন শুরু করেছি। তাই মাওলানা শেখ নাজিমের (ق) সঙ্গে সংযুক্ত থাকার রহস্যটি হলো যদি আপনি নিজের বিছানা থেকে উঠে মসজিদে যান এবং ফজরের সালাত আদায় করতে সক্ষম হন তাহলেই; অন্যথায়, আপনি সংযোগ তৈরি করতে পারবেন না। এটি একটি সহজতর ও দ্রুত পদ্ধতি। তাঁরা সকলেই ফজরের সময় রসুল (ﷺ) এর পিছনে সালাত করেন।
আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি আমাদের তা করার শক্তি দিন! এটি নফসের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন, তবে আমরা আল্লাহর কাছেিআবেদন জানাই, আমাদের সে সমস্ত মানুষদের অন্যতম হিসাবে কবুল করুন যারা আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামগণ, আউলিয়াইল্লাহগণ, ইমামগণের পেছনে সায়্যিদিনা মুহাম্মাদ ﷺ এর পিছনে আধ্যাত্মিক দিকনির্দেশের জন্য প্রার্থনা করেন, সালাত আদায় করেন; আর আমাদের নকশবন্দিদের ক্ষেত্রে, যারা এশার সময় সায়্যিদিনা আবু বকর আস সিদ্দিকের পিছনে নামাজ আদায় করেন আমাদেরকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। হে আমাদের রব, আমাদের তা করার তৌফিক দিন; আমাদের শক্তি, স্বাস্থ্য, সম্পদ এবং সামর্থ্য দিন, ইয়া রাব্বি! সেভাবে ইবাদত করতে আমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণা দিন, ইয়া রাব্বি!
বি হুরমাতিল্ হাবি-ব্, বি হুরমাতিল্ ফা-তিহা।
http://sufilive.com/How-To-Be-in-the-Spiritual-Presence-of-Mawlana-Shaykh-Nazim-6156.html
© Copyright 2016 Sufilive. All rights reserved. This transcript is protected
by international copyright law. JazakAllahu khayr.