১৯৯২ সালে, মাওলানা ( শেখ নাজিম কা. সি.) আমাকে ওয়াহাবিদের আক্রমণ করার জন্য বলেছিলেন, এবং আমি জানি যে ওহাবীরা কি পছন্দ করে না: আত-তাওয়াসসুল ওয়াল্ ওয়াসিলা, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুপারিশ, যিকরুল্লাহ, মাওলিদ এটা-সেটা ইত্যাদি। তাহলে আমরা কী করলাম? আমাদের সবার কাছে পৌঁছতে হয়েছিল, সুতরাং আমি ৫,০০,০০০ প্যামফ্লেট মুদ্রত করেছিলাম, প্রতিটি আট পৃষ্ঠা এবং আমাদের সমস্ত মুরিদকে বলেছিলাম, “এগুলি এই এই মসজিদের মধ্যে বিতরণ করুন।” আমরা কানাডা এবং আমেরিকার সমস্ত মাসাজিদকে এর আওতায় নিয়েছিলাম এবং এক ঘন্টার মধ্যে ৫০০,০০০ প্যামফ্লেট বিতরণ করেছিলাম! তারপরে, আল্লাহু আকবর, পরের দিন ইন্টারনেটে আক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছিল। আমরা ইন্টারনেটে প্রথম মুসলিম ছিলাম (ইসলামিক ইস্যু এবং শিক্ষাদানের জন্য ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠাকারী হিসেবে)। ১৯৯২ সালে, সিএনএন ইসলামিক ইস্যুগুলির জন্য আমাদের ওয়েবসাইটগুলির সাথে লিঙ্ক করেছে। পরের দিন, তারা অনেক ভয়াবহ ও কঠোর আক্রমণ করেছিল এবং তারা রবিতাতুল আলম-আল-ইসলামি, ইসলামিক ওয়ার্ল্ড লিগ থেকে আমার সঙ্গে বিতর্ক করার জন্য একজন নিউইয়র্কের শেখ পাঠিয়েছিল মুহাম্মদ অ্যাডলি নামে, এখনও আমার নামটি মনে আছে। তাই তিনি আমার কাছে কিছু প্রশ্ন করেছিলেন। আমি মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম এবং সত্যিই সময় ছিল না, তাই তারা বলেছিল যে আমি পালিয়ে যাচ্ছি, কারণ আমার কাছে কিছুই নেই বলে আমি উত্তর দিতে চাই না।
তাই আমি আমাদের লোক তাহের মতিন সিদ্দিকীকে বলেছিলাম, “আসেন মাতিন, আমার সাথে বসুন। এই রাতে আমি ঘুমাচ্ছি না, আমি তাদের জবাব দেব।” এবং আমি তাদেরকে হাদীসের উসুলের ভিত্তিতে জবাব দিয়েছিলাম--হাদীস সহিহ কী, হাদীস হাসান কী, হাদিস দা’ইফ কী -- ওদের অসারতার ভিত্তি তৈরির জন্য, যা মোট ৩২ পৃষ্ঠা, এক রাতের মধ্যে শেষ করেছিলাম! আমরা তাদের কাছে এটি একটি ইমেলের মাধ্যমে প্রেরণ করেছিলাম এবং সঙ্গে বলেছিলাম, “এটি আমার প্রথম যুক্তি। আমি আমার ভ্রমণ থেকে ফিরে এলে পরে চালিয়ে যাব।”
আমি ২১ দিনের পরে ফিরে এলাম এবং আমরা বিতর্ক শুরু করলাম। কয়েক হাজার মানুষ ইন্টারনেটে দেখেছেন। ওয়াহাবিরা যেমন প্রশ্ন করেছিলেন, “নবী (ﷺ) কি একজন সুফি? পবিত্র কোরআনে কি সুফিজমের কথা বলা হয়েছে? ” সাত বা আটটি প্রশ্ন ছিল। আমি তাদের নিজস্ব উৎস থেকে প্রশ্ন ধরে ধরে উত্তর দিয়েছি, এবং আপনি যদি এটি দেখতে না পান তবে আমার কাছে বইটি এখানে রয়েছে, আমি আপনাকে এটি দেখাতে পারি। মুহাম্মদ অ্যাডলি চুপ করে রইল, তাই তার লোকেরা ইন্টারনেটে বলতে শুরু করল, “হে আমাদের শেখ! উত্তর, উত্তর, উত্তর! ” কিন্তু সে কোনও উত্তর দিচ্ছিল না। অবশেষে তিনি বলেছিলেন, “আমি আগামীকাল ফজরের সময় ওয়াশিংটন ডিসির একটি বড় মসজিদে উত্তর দেব।”
আমি ক্যালিফোর্নিয়ায় ছিলাম, সেখানে যাওয়ার জন্য ছয় ঘন্টা বিমান ছিল, তাই আমি যেতে পরি নি। পরিবর্তে আমি ১০০ জন আফ্রিকান আমেরিকান মুরিদকে পাঠিয়েছিলাম, প্রত্যেকে বড় বড় লাল পাগড়ি পরেছিল এবং হাতে ছিল বড় লাঠি (যষ্টি)।
তারা তাঁকে বলল, “আমরা আপনার উত্তর শোনার জন্য শেখ হিশামের কাছ থেকে এসেছি।"
তিনি বললেন, “ঠিক আছে, আগে আমি ওজু সেরে আসি,” এবং সে অদৃশ্য হয়ে গেল!
... এটা এখন প্রতিষ্ঠিত করতে চান যেন এই সমস্ত কাজ কখনও হয় নি, যেন আমরা কিছুই করি নি! ...মাওলানা যখন আক্রমণ করতে বলেছিলেন, তখন এর অর্থ হলো, একাডেমিকভাবে আক্রমণ করা, অন্য কিছু দিয়ে নয়। সুতরাং আমরা এভাবেই ভুগেছি, আমরা কীভাবে আমাদের সময় এবং আমাদের প্রচেষ্টা ব্যয় করেছি, এমনটা নয় যে আমরা খেলছিলাম! এজন্য আমি বলি আল্লাহ তাদের ক্ষমা করুন, কারণ তারা সত্য জানেন না। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহুম্মা মাহদী কওমি ফা ইন্নাহুম লা- ইয়ালামুন,” তায়েফে শিশুদের পাঠানো হয়েছিল এবং তারা তাঁর পায়ে পাথর দিয়ে মেরে রক্তাক্ত করলে নবি করিম (ﷺ) বলেছিলেন, “তাদের ক্ষমা করুন, তারা জানে না।”
ওয়া মিনাল্লাহিত্ তাওফিক, বি হুরমাতিল হাবিব, বি হুরমতিল ফাতিহাহ।
... মাওলানা শেখ হিশাম কাব্বানি
১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ফেল্থাম, লন্ডন, যুক্তরাজ্য
ম্যানর হাউজে প্রদত্ত সোহবার অংশ।
সোহবার শিরোনাম: Unveiling the Reality in the Midst of Confusion
সূত্র: http://sufilive.com